রবিবার, ১৩ Jul ২০২৫, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
ধুনটে হ্যান্ডকাপসহ পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার পীরগঞ্জে বিএনপি’র মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত পীরগাছা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠণ নড়াইলে খুলনার রেঞ্জ ডিআইজিকে ফুলেল শুভেচ্ছা রাণীশংকৈলে ৭৫ জন গ্রাম পুলিশ পেলেন বাই-সাইকেল ও পোশাক আজকের গাছ- আগামীর নিঃশ্বাস- বৃক্ষরোপনে ইউএনও রুবেল রানা ইছামতী নদীতে থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার কিশোরগঞ্জকে গ্রীন ও ক্লিন কিশোরগঞ্জ গড়তে চাই- নবাগত ইউএনও নীলফামারীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইমারত নির্মাণ তারাগঞ্জে একই ব্যক্তির ৬ গরু চুরি নড়াইলে এক গৃহবধূর তিন সন্তান জন্ম ধুনটে বসতভিটা অবৈধ দখল চেষ্টায় থানায় অভিযোগ আবু সাঈদের রক্তের সাথে বেইমানী করবেন না- এটিএম আজহার ফুলবাড়ীর দৌলতপুরে জমি জমার বিরোধে মারপিট ১৭ বছর পর রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর জনসভা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা জুলাই বিপ্লবী শহীদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ ও আলচনা ত্রিশালে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ মিলল পুকুরে জলঢাকায় এক শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল দিলেন ইউএনও কর্মীবান্ধব সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন জাহিদ হোসেন

নড়াইলের রামনারায়ণ পাবলিক লাইব্রেরি বইয়ে ভরপুর

উজ্জ্বল রায়- নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ

নড়াইলের রামনারায়ণ পাবলিক লাইব্রেরি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা সদরে এই গ্রন্থাগারের অবস্থান। তার লাগোয়া উত্তরে শতবর্ষী লোহাগড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, অদূরে জীবনদীপ্ত লোহাগড়া আদর্শ মহাবিদ্যালয়, চারপাশ ঘেরা কলকাকলিত বিশাল লোহাগড়া বাজার। এই রামনারায়ণ পাবলিক লাইব্রেরি গ্রীবা বাঁকিয়ে প্রশ্ন রাখে, ‘আপনি কি আজ বই পড়েছেন। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, গ্রন্থাগারে বসে পড়া যায় বই।

আবার বাসায়ও নেওয়া যায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তখনো আধুনিক জ্ঞানগরিমার স্বীকৃতি পায়নি এ উপমহাদেশ। রবীন্দ্রনাথ পাননি নোবেল পুরস্কার। পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য তখনো চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ১৯০৭ সালের কথা। অজপাড়াগাঁয়ের ডাহুকডাকা এক জনপদে গড়ে ওঠে একটি পাঠাগার। ১১৬ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য ধারণ করে আজও স্বমহিমায় জানান দিচ্ছে নিজের অস্তিত্ব। রামনারায়ণ পাবলিক লাইব্রেরি। 

প্রথম তলার সিঁড়ি মাড়িয়ে দোতলায় ঢুকলেই প্রথমেই পাঠককক্ষ। দেয়ালে সাজানো প্রিয় কবি–সাহিত্যিকদের স্মিত হাসিমাখা মুখ। লেখা আছে কবি, সাহিত্যিক ও দার্শনিকদের অমর বাণী। সেখানে পাওয়া যাবে চিরপরিচিত একটি লাইন, ‘জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজ—বই, বই আর বই। দীর্ঘদিন ধরে গ্রন্থাগারটির সঙ্গে জড়িত গ্রন্থাগারিক মো. সিদ্দিকুর রহমান।

তিনি জানান- গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত গ্রন্থাগারের তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠাকালের দিক দিয়ে বাংলাদেশে এই গণগ্রন্থাগার নবম স্থানে ও উপজেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। দ্বিতলবিশিষ্ট গ্রন্থাগারটি ১১ শতাংশ জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। পাশেই গ্রন্থাগারের জমি আছে আরও প্রায় ১৯ শতাংশ। সেখানে করা হয়েছে দ্বিতল বিপণিবিতান। সেখানকার আয়ে চলে গ্রন্থাগারটি। ১৪ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ বেসরকারি এই গ্রন্থাগার পরিচালনা করে। পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর সভাপতি। বর্তমানে গ্রন্থাগারের আজীবন সদস্য আছেন ১ 

হাজার ৫৭৪ জন। এক হাজার টাকা জমা দিয়ে হওয়া যায় আজীবন সদস্য। সাধারণ সদস্যের মাসিক চাঁদা মাত্র ছয় টাকা এবং ছাত্রদের জন্য চার টাকা। যা আছে গ্রন্থাগারটিতে গ্রন্থাগারের পাঠককক্ষে বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা নিয়মিত রাখা হয়। অনেকেই শুধু পত্রিকা পড়ার জন্য আসেন গ্রন্থাগারে। আসেন বইপ্রেমী মানুষও। বেঙ্গল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ক্যালকাটা রিভিউয়ের মতো পুরোনো সম্পদ আছে এখানে। বসুমতী, প্রবাসী, ভারতবর্ষ ও ধূমকেতুর মতো দুষ্প্রাপ্য পত্রিকা রয়েছে এখানে। আছে নানা উপন্যাস, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মীয় বই। তুলট কাগজ, ভূর্জপত্র ও তালপাতায় লেখা পাণ্ডুলিপি ছিল এখানে। সংরক্ষণের সমস্যায় তা নিয়ে যাওয়া হয়েছে যশোর ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরিতে।

গ্রন্থাগারের সব কার্যক্রম হয় মূল ভবনের দোতলায়। পাঠককক্ষে সাজানো আছে টেবিল ও বিদ্যাসাগর চেয়ার। সেখানে রাখা আছে পত্রিকাগুলো। ডান পাশের একটি কক্ষে দুষ্প্রাপ্য পত্রিকা ও বইগুলো রাখা আছে সুরক্ষিতভাবে। গ্রন্থাগারে বসে পড়া যায় বই। আবার বাসায়ও নেওয়া যায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। শুক্রবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত পাঠকদের জন্য খোলা থাকে গ্রন্থাগারটি।পাঠকেরা যা বললেন ব্যবসায়ী সোমনাথ বিশ্বাস নিয়মিত এখানে আসেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই আমি সংবাদপত্র পড়তে আসি। সময় থাকলে অন্যান্য বইও ঘাঁটি।’ সবে পড়াশোনা শেষ করেছেন মেহেদী হাসান। তিনি পত্রিকা পড়তে পড়তে বলছিলেন, এখানে অনেকগুলো পত্রিকা একসঙ্গে পড়া যায়। এটা একজন চাকরিপ্রার্থীর জন্য খুবই প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠার ইতিহাস লোহাগড়া গ্রামে তিনঘর জমিদার ছিল। রায়, মজুমদার ও সরকার। শিক্ষা–দীক্ষায়ও তাঁরা অগ্রণী ছিলেন। রায়বাহাদুর যদুনাথ মজুমদার লাহোর ট্রিবিউন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছিলেন যশোর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান। ড. মহেন্দ্রনাথ সরকার ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দার্শনিক। অধ্যাপনা করতেন কলকাতা সরকারি সংস্কৃতি কলেজে।

যদুনাথ মজুমদার লোহাগড়ায় তাঁর বসতবাড়িতে একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। একই সময়ে সরকার বংশের একটি পাবলিক লাইব্রেরি হয়। যদুনাথ মজুমদারের মেয়ে বিয়ে করেন ড. মহেন্দ্রনাথ সরকারকে। এরপর মহেন্দ্রনাথ সরকারের উদ্যোগে দুই পারিবারিক গ্রন্থাগার এক হয় ১৯০৭ সালে। নাম হয় শ্রীকৃষ্ণ লাইব্রেরি। এর এক যুগ পরে সরকার বংশের ভুবন মোহন সরকার লাইব্রেরির জন্য সরকারবাড়ির সামনে নির্মাণ করেন দোতলা ভবন। তাঁর বাবা রামনারায়ণ সরকারের নামে গ্রন্থাগারটির নাম রাখা হয় রামনারায়ণ পাবলিক লাইব্রেরি। পরে গ্রন্থাগার ভবনটি স্থানান্তরের প্রয়োজন হয়। শাখা খোলা হয় লোহাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের একটি কক্ষে। ১৯৬৭ সালে গ্রন্থাগার সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে আনয়ারুজ্জামান স্কুলের সামনে একটি পরিত্যক্ত পাকা দোতলা বাড়ি নেন। সেখানে এখন গ্রন্থাগারের বিপণিবিতানটি রয়েছে। ১৯৭০ সালে পাশের গৌরাঙ্গ মন্দিরের জায়গা কিনে বর্তমানের গ্রন্থাগার ভবনটি তৈরি করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com